নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজিপুর গ্রামে দাবীকৃত যৌতুকের টাকা দিতে না পাড়ায় আকলিমা খাতুন (১৩) নামে এক গৃহবধূকে মাঝে মধ্যে স্বামী সাগর হোসেন এবং শ^াশুরী আছিয়া বেগম মিলে নির্যাতন করতো। নির্যাতন করে মেয়েটার স্বর্ণের গহনা কেড়ে নিয়ে তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু মেয়েটা বাবার বাড়িতে না গিয়ে পাশের গ্রামে দুলা ভাইয়ের বাড়িতে আশ্চয় নেয়। সেখানেই আকলিমা স্বামীর অপর রাগ অভিমানে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার আগে গলায় ফাঁস নেয়। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার খুবজিপুর বাজারে একটি পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়। সেখানেই মেয়েটা মারা যায়। মারা যাওয়ার কথা শুনেই লাশ বাজারে রেখেই স্বামীসহ শ^শুর বাড়ীর লোকজন পালিয়ে যায়। ওই সময় থেকেই মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। আড়াই ঘন্টা লাশটি বৃষ্টিতেই ভাসছিল। রাত সাড়ে ৮টার দিকে গুরুদাসপুর থানা পুলিশ লাশটি উদ্ধার করেন।
স্থানীয়রা জানায়, প্রায় তিনমাস আগে আকলিমা এবং সাগরের বিয়ে হয়। নিহত আকলিমা পাশ^বর্তী তারাশ উপজেলার কুসুম্বি গ্রামের আশরাফ আলীর মেয়ে। তার স্বামী সাগর হোসেন খুবজিপুর গ্রামের লিয়াকত আলীর ছেলে। সাগরের আগের স্ত্রীও নির্যাতন সইতে না পেরে বিষ প্রানে আত্মহত্যা করেছিলেন।
মেয়েটির দুলাভাই টিক্কা খান জানান, তিনমাস আগে আকলিমাকে সাগরের সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের সময় সাগরকে স্বর্ণসহ ১ লাখ টাকা যৌতুক দেয় তার পরিবার। বিয়ের ৬ মাস না যেতেই আকলিমার কাছে মোটা অংকের টাকা যৌতুক দাবি করে সাগর ও তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন। এ নিয়ে সাগর ও আকলিমার মধ্যে বাকবিতন্ডা লেগেই থাকতো। আকলিমাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রায়ই নির্যাতন চালাতো সাগর।
সবশেষ গত রবিবার বিকেলে যৌতুকের দাবীকৃত টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করলে সে তার দুলা ভাই টিক্কা খানের বাড়িতে এসেই গলায় ফাঁস নেয়।
বৃষ্টির পানির মধ্যে বাজারে লাশ পরে আছে কেউ নেই এমন সংবাদ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় উঠে। সরেজমিনে গিয়ে সাগরসহ তাদের আত্বীয় স্বজনদের দেখা পাওয়া যায়নি।
গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাহারুল ইসলাম বলেন, লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর সঠিক কারন জানা যাবে।#র্