কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হারবাংয়ে গরু চুরির অপবাদ দিয়ে রশিদিয়ে বেঁধে মা-মেয়েকে নির্যাতনের ঘটনায় মামলার অন্যতম আসামী হারবাং ইউপি চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলামকে নির্দোষ দাবি করেছেন চকরিয়া উপজেলার সকল চেয়ারম্যান। একই সাথে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানিয়ে বুধবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি দেন বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সমিতির চকরিয়া উপজেলা শাখা। গরু চুরির ঘটনায় মা-মেয়েকে নির্যাতনের বিষয়ে চেয়ারম্যানকে অহেতুক ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবী করে বুধবার (২৬ আগস্ট) বিকালে কক্সবাজারে সংবাদ সম্মেলন করেন চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ।
এসময় চকরিয়া উপজেলার ১৩ জন ইউপি চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন। জানা গেছে, মা- মেয়েকে নির্যাতনের ঘটনায় হারবাং ইউপি চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম ছাড়াও ধৃত নাছির উদ্দিন, নজরুল ইসলাম, জসিম উদ্দিন এবং ৩০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে নির্যাতিত পারভীন আকতার বাদী হয়ে ২৫ আগষ্ট বিকালে চকরিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-২২, জিআর৩৫৭/২০, তাং-২৫/৮/২০২০ইং। মামলার বাদী পারভীন আকতার চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানা আদিবপুর সেলিমের বাড়ি এলাকা মৃত আবুল কালামের স্ত্রী। সংবাদ সম্মেলনে চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান এসোসিয়েশনের সভাপতি ও ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ২১ আগস্ট দুপুরে হারবাং ইউনিয়নের মাস্টার মাহবুুবুল আলমের একটি গরু চুরি হয়। গরু চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় দক্ষিণ পহরচাঁদা এলাকার লোকজন গরুসহ চোরকে ধরে রশি দিয়ে বেঁধে মারধর করেন।
কিন্তু চেয়ারম্যান মিনারুল ইসলাম ঘটনার পূর্ব থেকে চট্টগ্রাম অবস্থান করেন। গরুর মালিক বিষয়টি মোবাইল ফোনে চেয়ারম্যানকে অবগত করলে, চেয়ারম্যান ফোনে গ্রাম পুলিশ আহমদ হোছনকে ঘোষনা স্থলে যাওয়ার নির্দেশ দেন। গ্রাম পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার সময় দেখেন অনেক লোকজন মহিলাসহ চোরদের রশি দিয়ে বেঁধে ইউপি অফিসের দিকে নিয়ে আসছে। এরিমধ্যে চেয়ারম্যান চট্টগ্রাম থেকে রওনা দিয়ে বিকাল ৫ টার দিকে ইউপি অফিসে পৌছে দেখেন রশি দিয়ে বাঁধা রয়েছে গরু চোররা। বিষয়টি তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানার ওসিকে অবগত করেন। পরে পুলিশ গিয়ে গরু ও সিএনজি জব্দ করেন এবং চোরদের থানায় নিয়ে যায়।
সংবাদ সম্মেলনে পশ্চিম বড় ভেওলা ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাবলা বলেন, এই ঘটনায় চেয়ারম্যান কোনোভাবে জড়িত নন। কিন্তু চেয়ারম্যানকে মামলার আসামী করেছে গরু চোরের সাথে জড়িত লোকজন। নির্বাচনী প্রতিপক্ষের লোকজনের ইন্ধনে চেয়ারম্যানকে মামলার আসামী করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত চেয়ারম্যানরা বলেন, মিরানুল ইসলাম এই ঘটনায় কোনোভাবে জড়িত নন। তাকে ফাঁসানো হয়েছে। সুষ্ঠ তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবী জানাচ্ছি। একই সাথে ওই সব মহিলারাও অপরাধী। তারা সংঘবদ্ধ চোরের দল। তাদের বিরুদ্ধে চন্দনাইশ থানায় গরু চোরের মামলাও রয়েছে। হারবাংয়ে গরু চোরের ঘটনায় যারা দড়ি দিয়ে বেঁধে নির্যাতন করেছে তারাও অন্যায় করেছে। নির্যাতনকারীদেরও শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।
এদিকে এই ঘটনার তদন্তে গত সোমবার (২৪ আগস্ট) কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছেন। কমিটিকে সাত কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।