মোংলা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের নারকেলতলা আবাসন এলাকার এক দরিদ্র পরিবারের সন্তান । কিশোরী বয়সে ভালবাসার স্রোত যখন তার জীবনের চারপাশে প্রবাহিত হতে শুরু করে তখনই ভালবেসে ফেলেন সৈকত নামের একটি ছেলেকে। সৈকতের সাথে একসময় শিমুর নিবিড় সম্পর্ক গড়ে উঠে। বাবা মায়ের অগোচরে লুকিয়ে লুকিয়ে সৈকতের সাথে দেখা করতেন শিমু। কিন্তু একটা সময় শিমুর সরলতার সুযোগ নেয় সৈকত। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শিমুর সাথে সৈকত গড়ে তোলে দৈহিক সম্পর্ক।
এক পর্যায়ে শিমু যখন অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে তখন সৈকতকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকে, আর যদি সে বিয়ে না করে তাহলে আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবেনা বলে জানায় শিমু । কিন্তু শিমুর অসহায়ত্ব কোনভাবেই মন গলাতে পারেনি সৈকতের। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হয়। অসহায় শিমুর চারিদিকে নেমে আসে অন্ধকার। কোন উপায় না পেয়ে বিয়ের দাবিতে সৈকতে বাড়িতে যায় শিমু।
কিন্তু সেখান থেকেও শুনতে হয় হুমকি। কোন উপায় না পেয়ে সৈকতের বিরুদ্ধে মোংলা থানায় বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষন মামলা করে শিমু। মামলা হওয়ার পর সৈকতকে আটক করে জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ। এভাবে কেটে যায় কিছু দিন।
মঙ্গলবার ( ৮ সেপ্টেম্বর) সকালে অসুস্থ অবস্থায় মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন শিমু।
এমন দূর্দিনে কেউ তার পাশে নেই। মা- বাবা আর্থিকভাবে খুবই অসহায়। মেয়ের চিকিৎসার ব্যায়ভার বহন করার সামর্থ তাদের নেই। মোংলার কুমারখালি এলাকার লোক মাফরত বিষয়টি জানতে পারেন পৌর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক শেখ কামরুজ্জামান জসিম। ছুটে যান অসহায় শিমুর কাছে। তিনি কিশোরী শিমুর খোঁজ খবর নিয়ে সেখানকার ডাক্তাদের সাথে কথা বলেন। তার চিকিৎসার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নেন কামরুজ্জামান জসিম।
বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) শিমুর কোল জুড়ে আসে ফুটফুটে এক পুত্র সন্তান। ওই দুপুরে গিয়ে দেখা যায় নবজাতক সন্তানকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন কামরুজ্জামান জসিম। শিমুর সন্তান প্রসবের সব খরচ তিনি বহন করেছেন।
জানতে চাইলে কামরুজ্জামান জসিম বলেন, আজ থেকে এই নবজাতক সন্তানের দায়িত্ব আমি নিলাম। তিনি নবজাতকের জন্য সকলের নিকট দোয়া চেয়েছেন।