পেকুয়ায় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালত অমান্য করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রেকর্ড নিস্পত্তির জন্য আদালতে মামলা বিচারাধীন। তবে আদালত অমান্য করে বিরোধীয় জমির পরিমাপ করতে ইউপি চেয়ারম্যান ওই স্থানে গ্রাম পুলিশসহ ইউপি সদস্যকে পাঠান। এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা দেখা দিয়েছে। উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের মৌলভীরদিয়ায় জমির বিরোধ নিয়ে আধিপত্য দেখা দিয়েছে। স্থানীয় সুত্র জানায়, ২৫ শতক জমি নিয়ে মৌলভীরদিয়ায় মৃত মাহমুদুল করিমের পুত্র মনছুর আলম গং ও মৃত মতিউর রহমানের পুত্র ছৈয়দুল আলম গংদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। পৃথক তিনটি দলিল মুলে ২৫ শতক জায়গা মনছুর আলম গং খরিদ করে। আর.এস ২৪৩ ও বিএস ১৬০ নং খতিয়ান থেকে মতিউর রহমানের ওয়ারিশগন ২৫ শতক জায়গা মনছুর আলম গংদের অনুকুলে দলিলমূলে হস্তান্তর করেন। যার দলিল নং ১৫১০, ৩২৩২, ৩২৯। এ সব জমিতে নামজারী খতিয়ান সৃজিত আছে। যার নং ২০৪৬। এ দিকে দলিলমূলে খরিদ সম্পত্তির দিয়ারা রেকর্ডে অসঙ্গতি দেখা দিয়েছে। সম্পত্তি বিক্রি করে দলিল দাতারা নি:স্বত্তবান হন। কিন্তু দিয়ারায় এদের নামে ভূল রেকর্ড হয়। দলিল গ্রহীতা ওই রেকর্ডের বিরুদ্ধে কক্সবাজারের যুগ্ম জেলা জজ আদালতে অপর মামলা ২৬৪/২০ রুজু করে। রেকর্ড সংশোধনের জন্য ছৈয়দুল আলম গংদের বিবাদী করে। সরকারের পক্ষে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক ও সহকারী কমিশন ভূমি, পেকুয়াকেও মামলায় পক্ষভূক্ত বিবাদী করা হয়েছে। আদালত বিবাদীদের অনুকুলে সমন জারি করে। বিচারিক আদালত চলতি বছরের ২৫ নভেম্বর শুনানীর দিন ধার্য্য করেছেন। এ দিকে ২৫ শতক জমির বিরোধ অধিক তীব্রতর হচ্ছে। আদালতে মামলাটি বিচারাধীন থাকলেও বিবাদীপক্ষ জমির আধিপত্য নিতে অনেকটা মরিয়া। জমি দখলকে কেন্দ্র করে দু’দফা বাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে। দুবৃর্ত্তরা মনছুর আলমের বাড়ি ভাংচুর করে। মগনামা ইউনিয়ন পরিষদে বৈঠকও হয়েছে। বিষয়টি অমীমাংসিত থেকে গেছে। তবে ইউপির চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিমের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। জমির মালিক ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মনছুর আলম জানান, দিয়ারার রেকর্ডের বিরুদ্ধে আমরা যুগ্ম জজ আদালতে মামলা রুজু করি। কিন্তু চেয়ারম্যান এ সব না মেনে ২৪ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) জমি পরিমাপের জন্য লোকজন পাঠান। ইউপি সদস্য ও দু’জন গ্রাম পুলিশসহ বহিরাগত হারুনুর রশিদসহ আরো কয়েকজনকে পাঠিয়ে অনাধিকারভাবে জমি পরিমাপ করাতে চেষ্টা করে। চেয়ারম্যানের ইন্দনে এর আগে দু’দফা আমার বাড়ি ঘর ভাংচুর করা হয়। আমরা ৪ ভাইয়ের মধ্যে তিন ভাই সরকারী চাকুরীজীবি। আমি উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা। এক ভাই বিজিবির সিপাহী। আরেক ভাই জনশক্তি প্রশিক্ষন ব্যুরোতে কর্মরত। অপর ভাই মাস্টার্সের ছাত্র। বাড়িতে আমার মা ও এক ভাইয়ের স্ত্রী থাকে। ২৪ সেপ্টেম্বরও আমার বাড়িতে অনাধিকার প্রবেশ করানো হয়েছে। ৯ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য শাহেদুল ইসলাম, গ্রাম পুলিশ আবু ছালেক ও আবুল শামা, বহিরাগত আশরাফুল মজিদ, হারুনুর রশিদ ভিটায় গিয়ে পরিমাপ করে। আমার মা নিষেধ করলেও তারা মানেনি। ইতিপূর্বে ইউপির চেয়ারম্যান আমাকে হুমকি ধমকি দিয়েছে মুঠোফোনে। বিজিবির সিপাহী জসিম উদ্দিনের স্ত্রী মোস্তফা বেগম জানান, আমরা জুলুম অত্যাচারের মধ্যে আছি। বাড়ি ভাংচুর হয়েছে দু’বার। জনশক্তি প্রশিক্ষন ব্যুরোর কর্মকর্তা জহির উদ্দিনের স্ত্রী রুমি আক্তার জানান, আদালতে মামলা থাকলেও গায়ের জোরে চৌকিদার ও মেম্বার এসে কিভাবে বিরোধীয় জায়গায় পরিমাপ করতে পারে। সেটি ন্যায় বিচারের পরিপন্থী। তারা এখানে এসে জমি পরিমাপ করছিলেন সেটি মোবাইলে ধারণ করে নিয়েছি। এর প্রমাণ আমরা সংরক্ষন করেছি। মনছুর আলমের মা আছিয়া বেগম জানান, আমরা ভীতির মধ্যে আছি। দলিল ও রেকর্ডের সাংঘর্ষিক বিষয়টি নিস্পত্তি করবে আদালত। এখানে কেন পেশী শক্তির ক্ষমতা দেখায়। ইউপি সদস্য শাহেদুল ইসলাম জানান, আসলে জায়গাটির পরিমাপের জন্য আসেনি। তবে কে কতটুকু ভোগ করছে সেগুলির হিসাব করতে এখানে আসা হয়েছে। চেয়ারম্যান সাহেব আমাকে এ বিষয়ে দায়িত্ব দিয়েছেন। এখানকার মেম্বার খোরশেদ অসুস্থ তাই এসেছি।