প্রবাদে আছে বাঘে ছুলে আঠারো ঘা, আর পুলিশ ছুলে ছত্রিশ! কিন্তু নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার অনন্য পুলিশিং বদলে দিচ্ছে পুলিশ সম্পর্কে মানুষের নেতিবাচক ধারণা। আর এ বদলে যাওয়া থানার কারিগর গুরুদাসপুর থানার ওসি মো. মোজাহারুল ইসলাম। যিনি গুরুদাসপুর থানায় বিগত দেড় বছর আগে যোগদান করেছেন।
গুরুদাসপুর থানায় গিয়ে দেখা যায়, থানার সীমানা প্রাচীরসহ বিভিন্ন জায়গায় লেখা আছে পুলিশই জনতা জনতাই পুলিশ। থানার প্রবেশ করলেই দেখা যাবে ডিউটি অফিসারের রুম। প্রধান ফটকের পাশেই রয়েছে ছাওনী যেগুলো থানায় বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আগত মানুষের সেবা ছাওনী হিসাবে পরিচিত। থানার মূল ফটকের ভিতরে রয়েছে নারী, শিশু,বয়স্কদের জন্য আলাদা সার্ভিস ডেস্ক। এক সময় অনেকের বিরক্তির কারণ ছিলো এই থানা প্রাঙ্গন। সাধারণ মানুষের জটলা লেগে থাকার পাশাপাশি পরিবেশ ছিল নোংরা, বর্তমানে মানুষের জটলা নেই। সাধারণ মানুষ নির্বিঘ্নে তাদের প্রাপ্য সেবা গ্রহণ করে চলে যাচ্ছেন।
ওসি মোজাহারুল ইসলাম বিগত দেড় বছরে গুরুদাসপুর উপজেলার অসহায় বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে এরই মধ্যে মানুষের আস্থাভাজন হয়ে উঠেছেন। শুরু থেকেই নিজ হাতে করোনায় আক্রান্তদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরন করছেন। দরিদ্র, অসহায়, অস্বচ্ছল, প্রতিবন্ধীসহ ভিক্ষুকদের ইউনিয়নে ইউনিয়নে খোঁজে খোঁজে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন। অন্ধকার রুম থেকে বৃদ্ধ দম্প্রতিকে উদ্ধার করে ছেলেদের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছেন এবং তাদের যেন কোন সমস্যা না হয় তার ব্যবস্থা করেছেন। থানায় যোগদানের পরেই ঈদগাহ নিয়ে ঝাউপাড়া গ্রামে সমস্যা ছিল সেটা সমাধান করেছেন। এমন অনেক মানবিক কাজ করে গুরুদাসপুর মানুষের আস্থা অর্জন করে যাচ্ছেন।
এছাড়াও বন্যার্তদের সহায়তা, শীতকালে গরীব দুখিদের শীতবস্ত্র বিতরন,ঈদে অসহায়দের ঈদ সামগ্রী বিতরণ, জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে চাচঁকৈড় ও গুরুদাসপুর বাজারে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, করোনাকালীন সময়ে করোনা মুক্তির জন্য প্রচার-প্রচারনা, চা বিক্রেতাসহ গরীব দুখিদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরনসহ থানায় কুইক সার্ভিস চালু করা হয়েছে। যাতে করে দ্রুততম সময়ে অভিযোগের তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। থানায় এলেই মহিলা ও শিশুরা চকলেট খেতে পায় এবং পুরুষ মানুষের জন্য চা পানের ব্যবস্থা করেছেন ওসি মোজাহারুল ইসলাম।
ওসি মোজাহারুল ইসলাম বলেন, পুলিশ সুপার স্যারের দিক-নির্দেশনায় থানায় দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি আমি চেষ্টা করি মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। যতদিন বেঁচে থাকবো মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করবো। অসহায় মানুষের জন্য কিছু করতে পারলে আমি অনেক তৃপ্তি পাই।#